Posts

Showing posts from April, 2020

বাংলা কবিতা - ৪

Image
জন্ম থেকে কাঁদছি, কখনো দুধের জন্য কখনো একমুঠো লাল নীল নুড়ি কাঁকরের জন্য এত কেঁদেছি যে বাড়ির লোক কান্নাটাকেই আমার ভাষা বলে ধরে নিয়েছে। কেউ কখনো আমার কান্নায় বিচলিত হয়নি, ভেবেছে কাঁদছি মানে বেঁচে আছি তাই আমি সয়তে পারি না কান্নার শব্দ মানুষের কান্না আমাকে বিহ্বল করে, বিশেষত পুরুষের কান্না আমাকে ফালা ফালা করে দেয় যেন আমার বুকের ভিতর পোষা মৃতদেহ কেউ শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে। মৃতদেহকে আমি ভয় পাই, আমার মতো যারাই দেখেছে প্রিয় মানুষকে মরা হয়ে যেতে তারা সবাই মৃতদেহকে ভয় পায়, এ আমার বিশ্বাস। কান্নার শব্দে স্নায়ু কাজ করে না, অস্থিত স্নায়ু পাগলের মতো পাহাড় জঙ্গল নদী হাঁতড়িয়ে ফুল জড়ো করে, সেই ফুল আমি বিছিয়ে দিই সকল অশ্রুসিক্ত চোখের ওপর, ঢেকে দিই কান্নার গতিপথ, তুমি বলতে পারো পাপ আমি জানি পুজা ।

যুদ্ধনদী এবং অনন্য

Image
'যুদ্ধনদী এবং অনন্য' আমার লেখা প্রথম কবিতাগ্রন্থ। এটি প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের ১১ই জানুয়ারী কলকাতা লিটিল ম্যাগাজিন মেলায়। প্রকাশক- 'পথের আলাপ'। এটি কোনো বানিজ্যিক প্রকাশনা সংস্থা নয়।এই নামে একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা আছে। সেই পত্রিকার বইমেলা সংখ্যার সাথে সম্পাদক অতি যত্নে আমার এই বইটি এবং অন্যান্য বই প্রকাশ করেন। এই বই এর প্রতিটি কবিতাই ২০১৬ সালের লেখা। 'যুদ্ধনদী এবং অনন্য'র মূলাধার হলো প্রেম। প্রেমকে ঘিরেই  সৃষ্টি হয়েছে জগৎ, যেখানে কল্পনা রয়েছে, আবেগ রয়েছে আর রয়েছে প্রিয় এক মানুষকে না-বলা সহস্র কথা।আবেগসর্বস্ব হওয়ায় এই বই এর আর কোনো সংস্করণ প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত আমি নিইনি। যুদ্ধনদী সিরিজের কবিতাগুলো এই ব্লগে প্রকাশ করা হলো। পরবর্তীকালে অনন্য সিরিজের কবিতাগুলিও পরিমার্জিত করে সংযোজিত হবে। আপাতত যুদ্ধনদী পাঠক স্পর্শ পাক। যুদ্ধনদী ১ অস্থি মজ্জার সবটুকু রস নিংড়ে তোর জন্য একটা নদী বানিয়েছি ভালোবাসাগুলো গড়িয়ে দিয়েছি             সবুজ ঘাসের ওপর দিয়ে আমার বাড়ির সামনে ধূ ধূ নকসী কাঁথার মাঠ রক্ত পায়ে হেঁটে চলে দলছুট গঙ্গা ফড়িংয়ের দল অমাবস্যার অন্ধ

পাখির কাছে স্বীকারোক্তি

Image
পাখি বিষয়ক কবিতা ১. জোড়া শালিক ____________ বড় বাড়ির খোলা উঠোন     ধানে গমে ছড়াছড়ি     শালিকের ভাতঘর      সারাদিন ওড়াউড়ি ওরা আসে দলে দলে খুঁটে খায় বৈভব কারো গরজ নেই ওদের বাড়া ভাতে ছাই দেওয়ার শুধু শালিক একলা এলেই বাড়ির বৌ-ঝি এমন কি পুরুষরাও দূর দূর করে গাল দেয় 'অ' এর উপসর্গ যোগে একলা শালিক আর 'সিঙ্গল মাদার' সমাজের বুকে নাকি ভয়ানক কুলটা জনসমক্ষে মুখ দেখিও যদি পাও জোড়াটা কেন শমনে কি সাথী লাগে? নাকি পটি করতে পতি লাগে ? একলা প্রাণ, আত্ম সম্মান, বাঁচার গান ভীষণ বুঝি সস্তা? গাধা আর কত দিনই বা বইবে পোড়া নুনের বস্তা? ২. কাক-কোকিল সম্পর্ক __________________ কোকিলের বাসায় ক্যালেন্ডার নেই তাই কাকের বাসায় ডিম পাড়ে সবাই বলে কোকিল চতুর কিন্তু কেউ বলে না কাক বোকা কারণ সে আশ্রয়দাতা কোকিল সঙ্গীত শিল্পী অন্যদের মতো শুধু সংসার করলে তার চলবে কেন? তাই সারা বছর বসন্তের জন্য রেওয়াজ করে গলা সাধে, গোপনে রেখে যায় 'কুহু' ডাকের উত্তরসূরী। কাক কোকিলের ডিমে তা দেয় যত্নে বাচ্চা লালন করে ডানা বড় হওয়ার অনেক আগেই উড়ে যায় কোকিল ছানা, খুঁজে নেয় পছন্দ ম

স্কুলবেলা ও রঙিন ইরেজার

Image
আমার ইরেজার জমানোর শখ ছিল তখন প্রাইমারি স্কুলে, ছোট্ট হ্যাণ্ডব্যাগ ভর্তি থাকত নানা রঙের ইরেজারে। পেন তখনও যেহুতু আমার ব্যবহারের তালিকায় ছিল না তাই ইরেজার গুলোকে ব্রহ্মার  আশ্চর্য সৃষ্টি বলে মনে হতো আমার। মজার ব্যাপার হলো মাস্টারমশাই এর দেওয়া পড়ার দাগ আমি অনায়াসে মুছে দিতাম, মুছে দিতাম বন্ধুর আঁকা নিখুঁত পাখির ডানা কিন্তু সমস্যা হতো ছাপটা নিয়ে। বহুবার আমি ধরা পড়ে গেছি শুধু ছাপ রয়ে গেছে বলে, ছোট্ট মস্তিষ্কে চাপ নিয়েছি, ভেবেছি ছাপটুকুও যদি তুলে ফেলা যায় তবেই আসল ম্যাজিক। আমি অঙ্ক বই নিয়ে বসতাম ইরেজার ঘষে তুলে দিতে চেষ্টা করতাম অঙ্কের সংখ্যা আর চিহ্নগুলোকে। লেখা অঙ্ক আমার খুব প্রিয় কিন্তু তাতে সংখ্যা আর সংকেতের ভিড় আমার একদম ভালো লাগত না। এমন বহুবার হয়েছে পুরো অঙ্কটাই আমি লিখে সলভ করেছি দিয়েছি শুধু সংখ্যার মধ্যে যোগ বিয়োগ গুন ভাগ ইত্যাদি হিজিবিজি সম্পর্কগুলোর সদ্ভাব রাখতে পারিনি। অঙ্কের মাস্টার হেসে বলতেন, "তোকে দেখলে অবাক লাগে। কী করতে হবে তুই জানিস, কীভাবে করতে হবে তাও তুই জানিস কিন্তু তবুও করতে পারিস না আসলে তোর মধ্যে 'X' নেই।" আমি তখন 'X'-কে চিনতাম