Posts

Showing posts from July, 2022

পৃথিবীতত্ত্ব

  পৃথিবীতত্ত্ব-১ আমি ঝুলে আছি আকাশ আর মাটির ঠিক মাঝখানে আছড়ে পড়তে ভয় পাছে ঝুলে থাকার আরাম নষ্ট হয় উড়তেও দ্বিধা যদি কখনও না মাটির দর্শন পাই আমি ঝুলে আছি বায়ুর বৃন্ত থেকে নিম্নমুখী আমার মাথা নুইয়ে পড়েছে অজাতশত্রুর অভিশপ্ত সিংহাসনের ওপর আমার চোখ থেকে জল নয় ঝরছে অস্ত্র বিরাট নখ দিয়ে আমি দুহাতে বায়ুস্তর খুঁড়ছি আমার প্রমাণ চাই                         একটা নয় দুটো নয় একগুচ্ছ যাতে লেখা আছে মানুষ পৃথিবীজাত অ্যামিবার নিকটতম আত্মীয়, যাতে লেখা আছে দেশ মানে শুধুই সহ-বাসস্থান। আমি ঝুলে আছি আমার মুঠো মুগুরের মতো দৃঢ়। তুমি পারবে না, তোমরা পারবে না তাই বলে আমিও কি ক্ষমতার জ্বলন্ত কপালে একটি স্নিগ্ধ চুমু দিতে পারবো না? পৃথিবীতত্ত্ব-২ পৃথিবী ঘুরছে না অনেক দিন ধরে। এই কথাটি সবার প্রথম কোপারনিকাসকে বললাম। উনি মানতে চাইলেন না, বললেন অসম্ভব, ঝুটা খবর। তারপর গ্যালিলিওকে বললাম, পৃথিবী একদম ঘুরছে না জানেন।  উনি বললেন, আমি এখন খুব ব্যস্ত, এবার কাছের জিনিসকে দূরে পাঠাবার 'দূরত্ববীণ' আবিষ্কার করছি, ফর্মূলা রেডি কিন্তু কিছুতেই সরছে না বিষাদ, দুঃখদানিগুলো ভরে আছে নিশিফুলে আমি বললাম, পৃথিবী যে গোঁয়ার্তুমি করছ

অভিমানের কবিতা

Image
অভিমানের কবিতা ১. বুকের ভিতর ধানঘর এখন শূন্য লাগে পাখি নাই ঊড়ে গেছে স্বধর্মে ক্ষুধা নয় আকাশ প্রিয় বলে ২. এমন দুর্দিনে আমার হাত খালি অভাবের কথা শুনে তুমি অন্ন বেড়ে দিলে হায়রে বুকের মাঝে জাপটে নিতে যদি বুঝতে ভাতের ক্ষুধায় অভিমান ভরে না! ৩. গুছিয়ে নেওয়া হবে না জীবন সুখের পায়রাকে ধান খাওয়াতে পারবো না আর! চাঁদ থেকে নেমে চরকা বুড়ি সারাদিন বুকের ভিতরখট খট শব্দ করে, ওকে থামাও! আমাকে ঘুমোতে হবে একমাত্র ঘুমোলেই ব্যথা কমে ৪. আবছা স্মৃতির ভিতর ঘুমিয়ে থাকুক তোমার পায়ের পাতার ওপর আমার হাত। একটা ধূসর পাহাড়, তার বাঁকে বাঁকে অশ্রুসজল দুখানি চোখ! ৫. এও এক কঠিন সময় যখন তুমি আমি একে অপরের নয় নিজের নিজের পথ সারাই করতে ব্যস্ত ৬. ডাক নাম থেকে উড়ে গেছে পায়রা শুধু পালক রয়েছে পড়ে তবু বলবো কখনও মুখোমুখি হলে ওই নামেই ডেকো ৭. এ বছর যতখানি বদলে গেছ তুমি ততখানিই মাটি কুপিয়ে আমি রবিশষ্য বুনেছি এখন দেখার তোমার বদলের রঙ খাঁটি নাকি আমার কুপিয়ে ফেলা মাটি!

বিচ্ছেদের কবিতা

Image
  দূর, কাছে বসো ১. তোমাকে হৃদয়হীন বললে আমার গাঁ উজার হয়ে যাবে একদিন, আমার বাদায় আর একটিও ধান হবে না। ধূ ধূ মন খারাপে সুফলা মাঠ সব ফুটিফাটা হয়ে যাবে। এসব স্বার্থের কথা, তুমি বুঝবে না কোনোদিন কারণ তোমার তো ভাতের অভাব নেই! ২. শরীর ফুরিয়ে গেলেও যদি প্রাণে বাঁচতে হয়তা হলে বুঝতে হবে শরীরই শেষ কথা নয়। শরীর ফুরিয়ে গেলেও যদি বুকের ভিতর ঝড় ওঠে, বুঝতে হবে শরীরই শেষ কথা নয়, মন নীরব হলেও তার আলাদা ভাষা আছে। সম্পর্ক ভেঙে গেলেও যদি চোখের কোণে ছলকে ওঠে অন্তঃস্রোতা নদী, তবে বুঝতে বিচ্ছেদই শেষ কথা নয়! বিচ্ছেদের পরেও একটা অন্য গল্প শুরু হয়। আর সেই গল্পটি শুরু করার জন্য ভীষণ ভাবে বেঁচে থাকতে হয়। ৩. সম্পর্কে গুমোট বাড়লে রাস্তার অচেনা দুঃস্থকে দেখেও মায়া জন্মে কিন্তু তোমাকে ভালোবেসে যে নিঃস্ব হয়েছে, বিচ্ছেদের আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে তাঁর অশ্রুও বর্ষার জল মনে হয়। ৪. আমার দিকে এগিয়ে আসা ভাগ্য বোঝাই নৌকোখানি নোঙর দিল কোন গাঙেতে আমি জানতে কেন পারিনি? বিঁধে যাওয়া পায়ের কাঁটা আলগা বুকে সামলে রখা মানুষখানি, মিলিয়ে গেল কোন যাদুতে আমি জানতে কেন পারিনি? আমার দিকে তাকিয়ে থাকা প্রেম পরশের চোখ দুখা

আবৃত্তির কবিতা

Image
  ক্ষুধার্ত ট্রেনটা ছুটছে। ট্রেনের জানলার জং ধরা অযত্নের রেলিং। সেই রেলিং এর ফাঁক দিয়ে আমি শ্রাবণের রোদ দেখছি। গ্রাম গঞ্জ দেখছি। সব থেকে বেশি দেখছি তা হল মাঠ-ঘাট গাছেদের ব্যস্ততা। এ বছর বর্ষা দেরি করে এসেছে তাই সদ্য শুরু হয়েছে রোয়ার কাজ। রোয়া দেখলেই আমার মনে পড়ে যায় প্লেট থেকে উঠতে থাকা গরম ভাতের ধোঁয়ার গন্ধ। এই ধোঁয়া খেলেও আমার পেট ভরে যায় অনেকখানি। নাক পেতে দিই উদ্বায়ী ধোঁয়ার গতিপথে। আহ! কি সুন্দর গন্ধ। কিন্তু এই গন্ধটা পালটে যায় সময় সময়। আমি যখন বাবার বাড়ি যাই, মা ভাত বেড়ে দেয়। ওই প্লেট থেকে যে ধোঁয়া ওঠে ওতে নাক গুজলেই গন্ধ পাই ছেলেবেলার। পাঁক ঘেটে তুলে আনা চুনো মাছের বাটি চচ্চড়ি, বিউলির ডালে হিং মৌরি ফোড়নের গন্ধ। পেট ভরে যাই গন্ধে। আমার পাতের ভাত পাতেই পড়ে থাকে। আবার যখন বিয়ে বাড়িতে খেতে বসি তখন ভাতের ধোঁয়া থেকে ফুলের গন্ধ বের হয়। ফুলের গন্ধে আমার ঘুম পাই। খিদে মরে যায় তাই নেড়ে চেড়ে উঠে পড়ি মাঝপথে। হব্বিষ্যির ভাতের যে ধোঁয়া তা থেকে শোকের গন্ধে বেরোয়, অস্থির করে তোলে আমাকে। শোক চ্যুইনগামের মতো, চেবানো গেলেও গেলা যায় না। তাই আমার গলা দিয়ে নামে না হব্বিষ্যি, অভুক্ত থেকে যাই।শশুরবাড়ির

বাংলা কবিতা

Image
  পৃথিবীতত্ত্ব-১ আমি ঝুলে আছি আকাশ আর মাটির ঠিক মাঝখানে আছড়ে পড়তে ভয় পাছে ঝুলে থাকার আরাম নষ্ট হয় উড়তেও দ্বিধা যদি কখনও না মাটির দর্শন পাই আমি ঝুলে আছি বায়ুর বৃন্ত থেকে নিম্নমুখী আমার মাথা নুইয়ে পড়েছে অজাতশত্রুর অভিশপ্ত সিংহাসনের ওপর আমার চোখ থেকে জল নয় ঝরছে অস্ত্র বিরাট নখ দিয়ে আমি দুহাতে বায়ুস্তর খুঁড়ছি আমার প্রমাণ চাই                             একটা নয় দুটো নয় একগুচ্ছ যাতে লেখা আছে মানুষ পৃথিবীজাত অ্যামিবার নিকটতম আত্মীয়, যাতে লেখা আছে দেশ মানে শুধুই সহ-বাসস্থান আমি ঝুলে আছি আমার মুঠো মুগুরের মতো দৃঢ় তুমি পারবে না, তোমরা পারবে না তাই বলে আমিও কি ক্ষমতার জ্বলন্ত কপালে একটি স্নিগ্ধ চুমু দিতে পারবো না? পৃথিবীতত্ত্ব-২ পৃথিবী ঘুরছে না অনেক দিন ধরে। এই কথাটি সবার প্রথম কোপারনিকাসকে বললাম। উনি মানতে চাইলেন না, বললেন অসম্ভব, ঝুটা খবর। তারপর গ্যালিলিওকে বললাম, পৃথিবী একদম ঘুরছে না জানেন। উনি বললেন, আমি এখন খুব ব্যস্ত, এবার কাছের জিনিসকে দূরে পাঠাবার 'দূরত্ববীণ' আবিষ্কার করছি, ফর্মূলা রেডি কিন্তু কিছুতেই সরছে না বিষাদ, দুঃখদানিগুলো ভরে আছে নিশিফুলে আমি বললাম, পৃথিবী যে গোঁয়ার্তুমি কর