Posts

Showing posts from September, 2019

জীবনমুখী কবিতা

Image
সিক্ততা                জীবনে কত কিছুই পুরোনো হয় অথচ বৃষ্টি দেখি কিছুতেই পুরোনো হয় না। আজও মনে হয় প্রথম কেক কাটা জন্মদিনের মতো প্রথম বর্ষা এলো বৃষ্টি সাংকেত মাত্র আকাশের সাথে মাটির চুক্তি একজন হালকা হতে চায়, অন্য জন ভারাক্রান্ত জীবনে কত কিছুই পুরোনো হয় অথচ সমুদ্র দেখি, বিস্ময় জাগে। স্রোতের প্রতিটা যাওয়া-আসা নতুন প্রতিটা ঢেউ একবার আসে  একবার যায় একই ঢেউ আর কখনো ফিরে আসে না শূন্যতা আমি মাটি থেকে এক বিঘৎ ওপরে হাঁটি কিছুতেই পা পড়ে না মাটিতে অনেকে বলেছে অহংকারী, কেউ কেউ বলেছে অসহায় অথবা অন্ধ আসলে সব দোষ আমার পায়ের বাস্তবের মাটি দেখলেই হাই ওঠে, ঘুম পায় অথচ স্বপ্নের মাটিতে পা পড়ে যায় বিলকুল আপন-পর শিশির ভেজা সকাল  অভিমানী একমাত্র তোমার ছায়াপথকেই সত্য বলে জানি সকল যাযাবর উদ্বাস্তু গৃহহীন ভেসে যায় অজানা ঠিকানায় আমিই একলা লুকিয়ে পড়ি  বদ্ধ স্মৃতির জোছনায় পুজোর গন্ধ ফুরিয়ে গেল ঢাকি চালের বস্তা বোঝাই করে  ফিরে চলেছে ঘর কেউ নও জানি তবু তুমি কি আমার পর?

বাতাস পুরুষ

Image
১. এই যে একখানি কথার পর আজ এত দীর্ঘ বিরতি এমন নিঝুম ঝুম চাষ, নিঃসঙ্গ উঠোন, একলা শালিক এমন তো ছিল না আগে যখন আকাশে তারা ছিল কথার পিঠে কথা ছিল আজ তোমার শরীরে শাসকের হাত          যতবার তোমাকে ছুঁয়ে যায় অন্যনারী                    আমার আংটিতে বিষ জমা হয় আমি বুঝতে পারি, তারা খসা আসলে পুর্ণজন্ম ২. ভূমিকম্প আমার যমজ ভাই, আমি যখন যা বলি ও তাই করে। আজ প্রথম ফিরে এল মুখ কালো করে বলল, তোকে ভালোবাসি বোন তাই পারলাম না ঘরখানি ভেঙে দিতে। আমি রাগে আগুন চোখে বললাম, মিথ্যে ! আসলে ওই পুরুষটা তোকে কিনে নিয়েছে সততা দিয়ে, ওই নারীটা দাদা ডেকেছে বাচ্চাটা ভেবেছে তুই ওর মামা, ব্যাস তুই গলে গেছিস মোমের মতো! ভুলে গেলিস আপন বোনকে ভূমিকম্প বলল লক্ষী বোনটি, তুই জানিস না ঘর ভেঙে গেলে মানুষ গাছ তলায় থাকে। গাছ তলায় কোনো দেওয়াল নেই, তাই মানুষ আরো কাছাকাছি আসে, নিবিড় হয়। তার থেকে থাক ছাদ থাক দেওয়াল, থাক দেওয়ালের ওপারে পুরুষের নিঃশ্বাস এপারে নারীর বিশ্বাস ৩. প্রতিটা হতাশা-ফুল লালচে কিংবা নীলচে রোজ ফোটে নক্ষত্রের মতো তাই বুঝি তুমি আছো আমার অন্তরঙ্গ জুড়ে প্রতিটা হতাশা-ফুল, রুপোলি কিংবা সোন

প্রেমের কবিতা - ৪

Image
প্রেম ও পথ আজ সাড়ে তিনশো বছর এই সিটটা দখল করে আমি বসে আছি একটুও বদল নেই বর্ধমান জংশনের প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ভিড় ঠেলে একলা হতে চাওয়া প্রতিটা বিবাগি মানুষ স্বছন্দে আটচালা নির্মান করেছে শিকড় বিছিয়ে দিয়েছে মাটির রন্ধ্রে কেউ জানতে চায়নি আমার প্রেম ও পথের নাম তবু আমি বলে গেছি তোমার পায়ের পাতায় আমার জলছাপের গল্প শুধু বদলে গেছে অপেক্ষার ঘড়িটা আর প্ল্যাটফর্মের মাটি ছুঁয়ে বেরিয়ে যাওয়া ট্রেনগুলির নাম  স্টেশন মাস্টারের ঘর থেকে ঝাঁসিগামী 'প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম এক্সপ্রেস' নামটা উচ্চারিত হলো আমার মনে পড়লো, তুমিও লক্ষীবাঈকে ভালোবাসতে নিঃসন্তান নারী বুক দিয়ে আগলে রাখতে চেয়েছিল ঝাঁসি, তুমি প্রাণপন করেছিলে সেই নারীকে পূর্ণতা দিতে আমি তখনও এই সিটটা দখল করেই বসে ছিলাম 'বোলপুর কবিগুরু এক্সপ্রেসে'র খবর হলো আমি এক নিমেষে তোমার বুক ছুঁয়ে পৌঁছে গেলাম খোয়াই এর তটে বনময়ূরীর পালকের ফাঁকফোকর দিয়ে তাকালে দেখা যাবে শান্তিনিকেতনে এখন শীত এসেছে কুয়াশারা রোদে পিঠ দিয়ে চুল শুকোচ্ছে লালমাটির ক্ষয়ীভবন, খোয়াই এর অগ্নিপরীক্ষা, নোবেল চুরি এসব ঘটনা প্রবাহ পৃথিবীর স

বাংলা কবিতা - ৩

Image
শিশির কথা            শিমূল তুলোর ভাঁজে জমানো কান্না আর রাতের সুবাসে তারাদের আদর এসব ছিল আমার ছাদের পুরোনো বৈশিষ্ট্য এখন এখানে রাত বড্ড গভীর যেন সে কখনো সকাল দেখেনি যেন তোমার বুক ছুঁয়েছে বিষ  পৃথিবীর সব জানলা মুখের ওপর কেউ একসাথে  বন্ধ করে দিয়েছে সশব্দে  রাত বাড়লে আমার বড্ড শীত করে সত্যি-মিথ্যে কোনো রাজপুত্রই কাছে আসেনি কখনো রূপকথার চাদরখানা কেউ জড়িয়ে দেয়নি বুকের শীত জুড়ে তবুও স্বপ্নে দেখি তোমার চিবুক ছুঁয়েছে আমার জুঁইফুল প্রতি শিশিরের মৃতদেহে জমেছে বেনামী যত ভুল তবুও স্বপ্নে দেখি তুমি মাঝি হয়েছো প্রবল ঝঞ্ঝা অতিক্রম করে সহজেই বুকে ঢেউ তুলেছো অভিমানি নদীটার বুকে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে দেখি তুমি দূর সীমান্তের এক সৈনিক মাত্র

গুচ্ছ কবিতা

Image
অনু-পরমানু ১. হারিয়ে গেছে সোনাকাঠি আঁচল জুড়ে মৃত্যু রাখি বেডরুম জুড়ে ইনসোমনিয়া বোতলবন্দী সুখ বালিস ছুঁয়ে স্লিপিং পিল বুক জুড়ে তোর মুখ ২. এখানে বৃষ্টিতে সব ঝাপসা যদিও মুষলধারা নয় ছোট্ট ফোটা ফোটা যেন অনেকগুলো দুঃখ মিলে নষ্ট জীবন গোটা ৩. আকাশ ফুঁড়ে দুঃখ উঠুক যত হৃদয়ে হোক যতই গভীর ক্ষত তবুও আমি ভালোবাসবো জানি আশ্রয় যখন পদ্মপাতা সুখ তখন টল্ মল্ করবেই ৪. পেরেক বিদ্ধ যীশু, ত্রিফলা ক্রুশের মতো আমিও নীরব কথাদের ছুটি দিয়ে ব্যথাদের দিয়ে ত্রাণ চোখের তারায় বাঁধবো শিশির, ভোরাই সুরে প্রাণ ৫. তোমার চোখে চোখ রেখেছি যবে বুঝেছি আমার জন্মবৃত্তান্ত তোমার ঠোঁটে ঠোঁট রেখেছি যবে বুঝেছি মরণ তুচ্ছ নিতান্ত ৬. জানি না চিনির কৌটো দেখলে কেন তোমার কথা মনে পড়ে বলতে পারো এমন শীতেও কেন বুকে মাঝে আগুন জ্বলে? ৭. শনির বলয়ের মতো একটা আবছায়া গোলোক তোমাকে আমার থেকে অস্পষ্ট করে রাখে তোমার আবিষ্কারের উচ্ছ্বাসে আমি পাশে থাকতে পারিনি তোমার চোখের অন্ধবিন্দুতে রাখতে পারিনি একটা জ্বলন্ত মোমবাতি, চলাচলের পথে বিছিয়ে দিতে পারিনি কৃষ্ণচূড়ার মোড়ক বলতে পারো এত নেতিবাচতকা ন