জীবনমুখী কবিতা







সিক্ততা

              

জীবনে কত কিছুই পুরোনো হয় অথচ বৃষ্টি দেখি কিছুতেই পুরোনো হয় না। আজও মনে হয় প্রথম কেক কাটা জন্মদিনের মতো প্রথম বর্ষা এলো

বৃষ্টি সাংকেত মাত্র
আকাশের সাথে মাটির চুক্তি
একজন হালকা হতে চায়, অন্য জন ভারাক্রান্ত

জীবনে কত কিছুই পুরোনো হয় অথচ সমুদ্র দেখি, বিস্ময় জাগে। স্রোতের প্রতিটা যাওয়া-আসা নতুন
প্রতিটা ঢেউ একবার আসে একবার যায়
একই ঢেউ আর কখনো ফিরে আসে না



শূন্যতা


আমি মাটি থেকে এক বিঘৎ ওপরে হাঁটি
কিছুতেই পা পড়ে না মাটিতে

অনেকে বলেছে অহংকারী, কেউ কেউ বলেছে অসহায় অথবা অন্ধ
আসলে সব দোষ আমার পায়ের
বাস্তবের মাটি দেখলেই হাই ওঠে, ঘুম পায়
অথচ স্বপ্নের মাটিতে পা পড়ে যায় বিলকুল



আপন-পর


শিশির ভেজা সকাল অভিমানী
একমাত্র তোমার ছায়াপথকেই সত্য বলে জানি
সকল যাযাবর উদ্বাস্তু গৃহহীন
ভেসে যায় অজানা ঠিকানায়
আমিই একলা লুকিয়ে পড়ি বদ্ধ স্মৃতির জোছনায়

পুজোর গন্ধ ফুরিয়ে গেল
ঢাকি চালের বস্তা বোঝাই করে ফিরে চলেছে ঘর
কেউ নও জানি তবু তুমি কি আমার পর?




Comments

  1. তিনটি সম্পুর্ন ভিন্ন স্বাদের কবিতা একই স্রোতে লেখা। হালকা ভাষায় অসাধারণ সুন্দর কবিতা।



    এই কবিতায় বৃষ্টি আর ঢেউ বোধহয় অলংকার হিসেবে আছে যা জীবনের পরিপ্রেক্ষিতে লেখা। আমার ধারণা ভুল বা ঠিক যাই হোক এই কবিতার তুলনা গুলোর সত্যিই তুলনা নেই। গোটা কবিতাটা হীরের সাথে তুলনা করা যায় বলে আমি মনে করি।



    সবাই তো স্বপ্নকেই বাস্তবের থেকে বেশি পছন্দ করে। আসলে আমাদের সবার বাস্তবের চেহারা বা আঙ্গিক কিন্তু একটা মুখোশের মত। আসল চেহারা ভাবনা বা স্বপ্নে বেরিয়ে আসে বলে আমি মনে করি। এই কবিতায় আপনার দাম্ভিক ভাব তুলে ধরে আসলে কিন্তু আপনি আপনার অমায়িক ভাবকেই তুলে ধরলেন। যথেষ্ট সুন্দর ভাবে এই কবিতাটি লেখা হয়েছে।



    "বদ্ধ স্মৃতির জোছনায়" - আহা! কবিতার উপমা বানানো আপনার দেখে শিখতে হয়। আর আপনার মোচড় দেওয়া দূর্দান্ত শেষ লাইন। কবিতার বহুমাত্রিক হওয়া থেকে এই কবিতাকে কেউ আটকাতে পারবে না। দুর্দান্ত লিখেছেন।

    তিনটি কবিতাই অসম্ভব সুন্দর। আশা করি পুজোতে আরও সুন্দর সুন্দর কবিতা উপহার দেবেন। আপনার জন্য আমার কাচা হতে লেখা একটি কবিতা পুজোর উপহার হিসেবে। দয়া করে গ্রহণ করবেন।

    আমি জানি ঘৃণা করে
    আমায় পৃথিবীর সমস্ত মানুষ,
    তার সাথে হয়তো তুমিও
    হয়ত নর্দমার জঞ্জালের মতো।
    কেনই বা করবে না,
    হয়ত চাও দিতে আমায় ফাঁসি
    একবার নয়, শত শতবার;
    তবে আমি কিন্তু তোমায়
    প্রচন্ড ভাবে ভালোবাসি,
    বাতাসের অক্সিজেনের মত,
    সেই যে চলে গেলে একবার
    মরণের খেলা খেলে
    আমায় কাদিয়ে দিয়ে,
    ক্রমাগত যত বেড়েছে দূরত্ব
    ততই বেড়ে চলেছে ভালোবাসা,
    বেড়ে চলেছে আমার কান্নার স্রোত।
    থাক, আমার প্রেম বুঝবে না কেউ
    কারন, আমার প্রতি ঘৃণা
    লোকের মনে অনেক বেশি;
    আমার হালকা আলোর চেয়ে
    সূর্যের আলো অনেক তীব্র যে।
    ভালোবাসার মত ঘৃণাও কি
    দূরত্বের সঙ্গে বেড়ে চলে
    সমানুপাতে, হয়ত হবে,
    না হয় শুধুই থাকব বেঁচে
    ঘৃণার পাত্র হয়ে সারাজীবন
    পানের পিকদনির মত;
    শুধু একটা ছোট্ট আশা নিয়ে
    যদি তুমি মনের এক কোণে
    একটু হলেও আমায় ভালোবাসো।

    ভাল থাকবেন। সুখে থাকবেন। আপনার পুজো ভাল কাটুক। লিখতে থাকবেন।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আপনার আলোচনা প্রতিবার আমাকে মুগ্ধ করে, প্রতিবার মনে হয় কেউ না পড়ুক আপনি নিশ্চয় আমার ব্লগে এসে ঘুরে যাবেন।

      আপনার লেখা কবিতাটিও সুন্দর কারণ অনুভূতি বড় খাঁটি এবং অনুভূতিই খাঁটি কবিতার জন্ম দেয়। আপনার পুজোও ভালো কাটুক।

      Delete
  2. দারুণ কবিতাগুলি

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

পাখির কাছে স্বীকারোক্তি

বিচ্ছেদের কবিতা

ভাঙন

বিষণ্ণতার গল্প

কবিতা

আধুনিক কবিতাগুচ্ছ

লক্ষ্মী ঝাঁপির ধান

গুচ্ছ কবিতা

প্রেমের কবিতা