Posts

Showing posts from February, 2020

প্রেমের কবিতা - ১১

Image
চৌকাঠ তুমি কখনো চৌকাঠ দেখোনি তোমার গ্রামের কোনো ঘরে চৌকাঠ নেই তুমি দেখেছ নগ্ন শরীরের বাতাবরণ সেই আবহাওয়া তোমার ফুসফুসে গ্যাস বেলুনের মতো পুরে দিয়েছে দুঃসাহস তাই তুমি অনায়াসে ইচ্ছের নাম দিয়েছ শুদ্ধতা আমি কিন্তু প্রশ্রয়ের অপর নাম পাপ বলে জানি রাংতার প্রলেপ আমার স্বামী সপ্তাহান্তে ব্যাগভর্তি ভয় আনে শ্বাসমূল উপড়ে লড়াকু বৃক্ষটার দিকে ছুঁড়ে দেয় কঠিন চ্যালেঞ্জ বিশ্বাস করো বাস্তুতন্ত্র বদলে যায় এ ভয় শ্রাবণের ত্রিস্রোতা নদীর মত পাংশন আমাকে ক্লান্ত করে কিন্তু বিবর্ণ নয় আমার শরীরে তোমার প্রলেপ                                     যেন ঝলমলে রাংতা কাঁটাগাছ আমার স্বপ্নে অসংখ্য কাঁটাগাছ স্বর্গ-মর্ত্য-পাতালব্যাপী অধিকারের ডঙ্কা বাজায় আমার ভয় করে, তোমাকে হারিয়ে ফেলার ভয় আমি ছুঁড়ে দিই কাটারি ঘুমের মধ্যে রক্ত ঝরে বৃষ্টির মতো, প্রতিটা রক্তবীজে                                 জন্ম নেয় লক্ষ লক্ষ কাঁটা স্বপ্ন ভেঙে যায়। দেখি,                                সীমান্তে কাঁটাতার                                       ওপারে তুমি ফুল হাতে

গুচ্ছকবিতা

Image
রামধনু পাহাড় জীবন প্রবহমান। এই প্রবাহমানতায় প্রকৃতির সাথে প্রতিদিন রঙ বদলায় মানুষের জীবন-যাপন এইভাবেই চোরা স্রোতে দিন আসে, দিন যায় কিছু মুহূর্ত ঝিনুক কৌটোয় মুক্তের মতো ঝলমলে করে। ছোট্টবেলায় তখন সবে ক্লাস ফোর বর্ষাকাল, প্রদীপের ক্ষীণ আলোয় ঠাম্মির কাছে শুনেছিলাম, রামধনু পাহাড়ের গল্প‌। যেখানে গাঢ় লাল রঙের সাথে ফিকে বেগুনীর বড্ড কলহ ঘোর সবুজের সাথে কাঁচা হলুদের উদ্দাম বন্ধুত্ব আমার তেমন একটি রামধনু পোষার সখ‌ দানাপানি দিয়ে আমার পড়ার ঘরে টেবিলের পায়ায় বেঁধে রাখবো তাকে সে ইচ্ছে মত আমাকে রঙ উপহার দেবে মন খারাপের রঙ হঠাৎ পাওয়া উচ্ছ্বাসের রঙ বর্ষাদিনে ছাতা ভোলার উৎকন্ঠার রঙ প্রিয়জন হারানোর ধূসর রঙ সবটুকু... সবুজ সমারোহে হে অরণ্য, তোমার ভালোবাসার আতিশয্যে আমি সুন্দর হয়ে উঠি প্রভাতের সূর্যের মতো লাল হয়ে উঠি যত বার নিজেকে গোছায় পরিপাটি করে চোখ ঠোঁট উপছে ওঠে তারুণ্যে আয়নার সামনে দাড়ালে দেখি, আমি নয় বন হেসে উঠছে আনন্দে আমি নেই কোত্থাও আয়নাতে নয়, চিরুণিতে নয় তোমার সবুজে সবুজে মিশে গেছে আমার সূর্য ওঠার রঙ। রামগড়ুরের ছানা তোমার জীবনটা অংকের মতো অগুন্তি সংখ

প্রেমের কবিতা - ১০

Image
সংলাপ বৈতরিণী : রাতের বেলা ডুমুরদহ গিয়েছ কখনও? ওখানে অন্ধকার বড় সরল। পা রাখা মাত্রই কালো জল তোমাকে ডুবিয়ে দেবে। প্রবুদ্ধ : খামোকা অন্ধকারে যাবো কেন? আমার চারিদিকে কারা শুধু সকাল ফুটিয়ে রেখেছে। তাছাড়া একটা দীর্ঘ প্যাঁচানো গান প্রাচীরের মতো আমায় ঘিরে রাখে, আমি কিছুতেই আলোর সীমানা ছাড়িয়ে বের হতে পারি না। বুঝতে পারি না এত আলো কোন কাজে লাগাবো! আলো বড় অসহ্য। ইট কাঠ সুড়কি সব স্পষ্ট দেখা যায়। বৈতরিণী: 'প্র' এই জাগতিক নিয়ম বড় নিঠুর গো! যার যা চাই না, পৃথিবী তাকে তা জোর করে দিয়েই ছাড়বে। এক কাজ করো তোমার উদ্বৃত্ত আলোটুকু আমাকে দাও। আমার চেনা বহু মানুষ গভীর আঁধারে ডুবে আছে। ওদের জন্য চশমা বানাবো। দুচোখে আলোর ঠুলি পরে ওরা সমস্ত জীবনের আঁধারের বুকে পেরেক ঠুকে দেবে। প্রবুদ্ধ : 'বৈ' তুমি আমাকে নির্ভার করলে! সার্থক নাম তোমার। আমার আলোক থেকে সমস্ত ঝলকটুকু ছেঁকে নিও, বিনিময়ে তোমার স্তনের মতো নরম ঋজু আঁধারে ভরিয়ে দিও আমায়। আলোতে আঁধার মিশলে তবেই ছায়া হয়, মায়া হয়। বৈতরিণী : 'প্র' যতবার তোমার কাছে আসি অদ্ভুত লাগে জানো! তোমার ভাবনাগুলোর নিজস্ব আকাশ আছে। আমি তোমার মতো কর

প্রেমের কবিতা - ৯

Image
একগুচ্ছ প্রেমের কবিতা জলের চেয়ার জল থেকে ছেঁকে নিয়েছি সমস্ত ডুবে যাওয়া                                                ভেসে যাওয়া দোষগুণ নির্বিশেষে জল এখন শুধুই তরল বেদের মেয়ে জ্যোৎস্নাকে কেউ ব'লো কলসি আর ভাসবে না গাঙে দেখা করার অন্য অজুহাত খুঁজতে ইচ্ছে করলে তুমি চেয়ার পেতে বসতে পারো জলে যেভাবে পড়ার টেবিলে বসো, চিৎকার করে মুখস্থ করো বাসি পড়া পরখ করো, জল নড়বে না এতটুকু ভয় দেখাবে না একদম অনেক হয়েছে, এবার শান্ত হও তুমিও আর তোলপাড় ক'রো না জল চাবুক চালাতে হয় তরলে নয় পাথরে চালাও  সীমান্তে যে ছবিটা ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত ছুঁয়েছিল যে ছবিটা কাঁটা তারে ফুল ফুটিয়েছিল যে ছবিটায় লুকিয়েছিল একমুখ না কামানো দাড়ি চোরা পথে বর্ডার ডিঙিয়ে দেশ বদলের রহস্য‌ যে ছবিটায় দুটো ঠোঁটের মাঝে একফালি আকাশ তোমার সেই ছবিটাই ঈদের দিনে সূর্য ডুবেছিল ‌ তোমার সেই ছবিটার জন্য আমি একটা কাঁচের ফ্রেম কিনেছিলাম। ছবিটা যে জ্যান্ত ছিল বুঝতে পারিনি, বালিশের তলা থেকে মাঝরাতে উধাও। ভোরের আলোয় দেখি, তোমার সেই ছবিটা তিমিরের যমজ বুকের ভাঁজে মালিকানার লড়াই-এ গো হারা ক্লান্ত আমি          

বাঘমুণ্ডি

Image
বাঘমুণ্ডি        পাহাড় : বই এর ভাঁজে শীত ঘুম আর বুক ছুঁয়ে তোর ঠোঁট বিরহী পাহাড় পোষে অসুখ আর ধূসর বাঁধে জোট ঝর্ণা : জল ছুঁয়ে তোর পা আর তোর স্পর্শ ছুঁয়ে আমি ওই পাহাড় জানে সব গল্প কথা,ঝর্ণাও অন্তর্যামী বন : শিখর জানে মৃত্যু-কথা,আজ আমিও জানি মরণ কাছ ঘেঁষে আত্মজন তবুও কেন ব্যথিয়ে ওঠে বন নুড়ি : ঝরন্ত জলের শব্দে আহত নুড়িও চেনে আমার উচ্ছলতা, তোর স্পর্শ-দৃষ্টিতে বিচ্ছিন্ন আঙুলের জোড়,নাম দিয়েছি বিহ্বলতা ছৌ-নাচ : পাকদণ্ডির পশ্চিম ঢাল প্রেমিক আদর-গাছ পায়ের কাছে শীত কিত কিত্ প্রিয় ছৌ নাচ মুখোশ গ্রাম: প্রিয় জনের মুখ নেই, আছে কেবল কাঁপন ধরা সুখ মুখোশ গ্রামে সবাই শিল্পী,তাদের ছত্রিশ ইঞ্চি বুক তৃণভূমি : বিস্তীর্ণ ঘাসফড়িং গড়িয়ে চলে,পায়ে তাদের চাকা প্রেমিকার সুডৌল বুক যেন সবুজ সুতোয় ঢাকা