আবৃত্তির কবিতা - ২
পানপাতায় কাজল
ছোটো বেলায় একটি কাজল পেনসিলের জন্য মায়ের কাছে কেঁদেছিলাম দু বছর
দু টাকা মাত্র দাম তবুও মা কিছুতেই কিনে দেয়নি।
বলেছিল, বাড়িতে প্রদীপের সলতে পুড়িয়ে পান পাতায় কাজল পেতে দেবো
ওতে চোখ পরিষ্কার হবে।
দিয়েও ছিল তাই, আমি পরিনি
ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলাম পানপাতাটা
আমার তখন কাজল পেনসিলই চাই ।
মাকে বলেছিলাম, তুমি খারাপ মা! কিচ্ছু কিনে দাও না।
সবার কাজল পেনসিল আছে শুধু আমার নেই।
মা রাগ করতো না, কেবল হাসতো
ওই হাসিটা আমার আরো অসহ্য লাগতো
সেদিন সারাদিন রাগ করে ভাত খাইনি।
রাতে ভাত মেখে গোল গোল করে মা খাইয়ে দিয়েছিল
বলেছিল, মায়ের কাছে দু টাকা নেই।
আমি বিশ্বাস করিনি।
বলেছিলাম, তুমি তো অনেক বড় আর বড় মানুষদের কাছে টাকা থাকে
মমতার মায়ের কাছেও কত টাকা থাকে
মা কিছু বলেনি, চুপ করেছিল
ভাঙা মেলাতে মায়ের কাছে আর একবার বায়না করলাম
বললাম, দেড় টাকা দিলেই ওরা দিয়ে দেবে
তবুও মা উঠোন ঝাঁট দিয়েই গেলো যেন প্রধান মন্ত্রী আসবে আমাদের বাড়িতে
আমি চিল চিৎকার করে বললাম, ভাঙা ঘর
দিন রাত কেবল বোকার মতো উঠোন পরিষ্কার করো
মা তবুও চুপ, মেলা উঠে গেল
ভুলে গেলাম কাজল পেনসিলের কথা।
দু যুগ পেরিয়ে গেল।
সময় কাজল পেনসিল এত সহজলোভ্য করে দিল
যে আজ নিজের চোখদুটোকে বড় দামী মনে হয়
যাইহোক আজ আবার একবার কাজল ফুরিয়েছে
এখন দুশো টাকা দাম
কিনতে পারলাম না কারণ আমার কাছেও টাকা নেই।
দিদিমণির কাছে টাকা নেই শুনলে হয়ত ছাত্রীরা সবাই (এবং কিছু ডেপো ছাত্ররা) কিনে দিতে পারে।
ReplyDeleteযাই হোক অহেতুক ফাজলামির জন্য মার্জনা প্রার্থনা করি। আপনার অনবদ্য লেখার বন্ধুনিতে লেখা যথেষ্ট প্রানবন্ত হয়ে উঠেছে। আপনাকে শুভকামনা জানাই। এরকম অনেক ভাল লেখা আমাদের উপহার দিন। ভাল থাকবেন।
আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ..
ReplyDeleteআপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ..
ReplyDelete