গুচ্ছ কবিতা




গাছেদের রক্ত দাও 


তোমার বাঁচার রসদ যারা নিঃশর্তে জোগায়
উচিয়ে তলোয়ার তুমি ধরছো তারই গলায়?
কাটতে হলে আনাজ কাটো
               রান্না করো
                             আনন্দে খাও
কেউ তোমায় বাঁধা দেবে না
কিন্তু খবরদার! গাছ কেটো না
                                 তফাৎ যাও
                                          তফাৎ যাও
সমাজের সব অসুখ বিসুখ খেলার ছলে শুষছে
তোমার যত বিষ-নিঃশ্বাস ওদের শরীরেই মিছে
তাকিয়ে দেখো গাছেরা সব রক্ত স্বল্পতায় ভুগছে
হাসপাতালের বেডে শুয়ে রক্তের জন্যেই ধুকছে
এগিয়ে এসো, বাঁচিয়ে তোলো
                                          ওদের যত্ন নাও
                               একটা সবুজ পৃথিবীর গড়তে
                                        গাছেদের রক্ত দাও




    বিসর্জন 


রাগ করো না,  তুমি তো সেই মানুষ যারা মাটির দেবীকে মহা-সমারোহে পুজো করে। নিখুঁত পুজো, পান থেকে চুন খসলে চলবে না, কাঁঠালি কলা জোড়া চলবে না, বেলপাতায় ছিদ্র চলবে না, গঙ্গাজলে ভাটা থাকলে চলবে না, নিচু জাতের বামুন হলেও চলবে না এমনকি
ধুনোর গন্ধ, কর্পূরের উবে যাওয়ার ক্ষমতা সবটা যাচাই করে তবেই পুজোয় বসো।।তারপর কি করো? ভগবানের সাথে সন্ধিপত্র স্বাক্ষরিত হলেই ওটাকে পানা পুকুরে ঝপাং! আর আমি তো মানুষ! কোনো শিল্পীর আঁকা ভাস্কর্য নই, ঘোষ পাড়ার একটা গেঁয়ো মেয়ে, আমার বেখাপ্পা স্তন, ভোঁতা নাক, মোটা ঠোঁট সবটুকুই আমার মায়ের জঠরে একটু একটু করে সম্পূর্ণতা পেয়েছে, এ তো কুমুরটুলি থেকে আনানো দেবী মূর্তি নয় যে ইচ্ছে মতো তুলি চালাবে তাই আমার জন্যেও যে ঐ পানাপুকুর কিংবা পচা ডোবায় বরাদ্দ তা আমি জানি। বোধনে তোমার যত বেশি আগ্রহ বিসর্জনের তৎপরতা আরো হাজার গুণ।
 

Comments

Popular posts from this blog

বিচ্ছেদের কবিতা

কবিতা

পাখির কাছে স্বীকারোক্তি

বিষণ্ণতার গল্প

জীবনের কবিতা

ভাঙন

আধুনিক কবিতাগুচ্ছ

প্রেমের কবিতা

বৃষ্টি কুঁড়িগুলো ফুটবে