আবৃত্তির কবিতা - ৫
আবৃত্তির কবিতা
মহামারী
সংকটকাল আসন্ন প্রভু, এবার তো চোখ মেলো
আমার শ্লেট ভেঙেছে সন্ধ্যাদি
হাতের রেখায় কাঁচা কঞ্চির দশ ঘা সপাৎ সপাৎ
অশ্রু পড়েছে টপ টপ জিদ বেড়েছে আরো জোরে
তুমি তখন গভীর ধ্যানে শাস্তি দিলাম আমিই নিজে
সন্ধ্যাদির সাধের বাগান গুড়িয়ে দিলাম এক নিমেষে
এরপর দুহাজার সালের বন্যায় ভেসে গেল বাবার
কাঁঠাল বাগান, ডুবে গেল বসতবাড়ি
আমিও সেদিন জলের তোড়ে ভেসেই গেলাম
প্রাণ বাঁচলো কোনও ক্রমে, তুমি কিন্তু সেদিনও ধ্যানে।
বলল লোকে ডাকতে হবে নিষ্ঠা ভরে আমি ভাবলাম
আমারই বোধহয় নিষ্ঠার অভাব
এবার কিন্তু কালাচ এসে বিষ মেশালো
ভাতের থালা নীলচে হলো পৃথিবীর
মানুষের আকাশ বাতাস গাছগাছালি
এক খাবলে গিলে নিলো মহামারী
ঘড়ির কাঁটা ঘুরেই গেল কক্ষপথে,
মানুষ সকল বুঝে গেল তুমি ধ্যানস্থ তাই ঈশ্বর
ভ্যানিস
লেখা আসে না আজকাল। যা কিছু ছুঁয়ে দিই তরল হয়ে গলে পড়ে। ধোঁয়ার মতো উবে যায়। ভাবলাম লিখতে যখন পারছি না তখন অন্তত সংসারটা গুছিয়ে নিই। যেই হাত দিলাম সংসারে অমনি কর্পূরের মতো উবে গেল আমার সাধের আলনা, প্রিয় শাড়ি, পুরোনো ঘড়ি, ওনার ঘামমাখা শার্ট। এমন কি অন্তর্বাসগুলোও
বর্ষার মেঘেদের সাথে মিশে বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ল
আমার সাধের সংসার।
গাছেরা শিকড় বিছিয়ে শুষে নিল আমার সংসারের রসদ, বালতিতে জমিয়ে রাখল সারা বছরের রান্নার জল। ইচ্ছে ছিল আয়নাটা পরিষ্কার করবো, চিরুনিতে হাত দিতেই বাসি চুল সমেত চিরুনিটা সিগারেটের ধোঁয়ার মতো উবে গেল। আমি ভয়ে গুটিয়ে রইলাম জোঁকের মতো। সামনে খোলা পুরোনো অ্যালবাম, কবিতার খাতা, প্রিয় মানুষগুলো। আমি পিছোচ্ছি, ক্রমশ, ক্রমশ..
প্রিয় মানুষগুলো হাসছে, আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। আমি দ্রুত গতিতে পিছনে সরে যাচ্ছি, সরে যাচ্ছি আর ছোঁবো না ওদের
মেঘ ভাঙছে
বৃষ্টি পড়ছে
আমি সরে যাচ্ছি কোলাহল থেকে
আরও পড়ে দেখুন
প্রথম কবিতাটি যতদূর সম্ভব কোভিড এর গল্প। আমি নিজেও ভুগেছি তাই প্রচন্ডভাবে মিল খুজে পেলাম। আর আপনার নিষ্ঠার অভাব নয়, বোধহয় ঈশ্বরের ই নিষ্ঠার অভাব, তাই দাইত্বটা সঠিক ভাবে পালন হয়নি মহামারীর সময়ে।
ReplyDeleteদ্বিতীয় কবিতায় একদিকে পেলাম 'Writer's Block' -এর অনুভূতি, অন্যদিকে পেলাম স্মৃতির হাতছানি। সংসার জিনিস টাই এমান, আমার মতে যার অর্থ সং-ই সার। কিন্তু পালিয়ে যেতে চাইলেও তো পালিয়ে যাওয়া যায় না।