বাংলা কবিতা



 বদলে যাওয়া শিশিরগুলো

এইভাবেই কি বদলে যায় শিশিরগুলো? আগে যেমন ঘাসের ওপর ঝলমলিয়ে রোদ মাখত এখন কেন আর মাখে না? আগে কেমন রঙিন হয়ে রাত জাগত এখন কেন আর জাগে না? শিশিরগুলো হাসির মতো খিলখিলিয়ে উঠত আগে এখন কেমন কান্না লাগে!



চাঁদগাঁথা

অনেকখানি মেঘ পেরিয়ে চাঁদ অর্ধেক থেকে পূর্ণ হয়েছিল। একদিনের জ্যোৎস্না, ফুটফুটে আঙিনা, কি সুন্দর সব দৃশ্য!চোখের ওপর সুখ রঙা পালক ঊড়ে এসেছিল। তারপর ক্ষয়ে ক্ষয়ে গেল আলোঘর, থেমে গেল ঊড়ান। ডিঙি নৌকোর মতো চাঁদখানা মাঝমেঘে লাট খেতে খেতে ডুবে গেল।



অগ্নিসাক্ষী

আলোর লোভে সূর্যের বুকে ঝাঁপিয়ে ছিলাম
অসীম আঁধারে তাই ভেঙে গেল বিধিলিপি‌। আপন ছিল এক, সত্যের মুখোমুখি এসে পিছন পানে ছুটে চলে গেল সে, যত দূর এক দমে ছুটে যাওয়া যায়। অগ্নি সাক্ষী করা গাছে ফুল ফুটে থাকে, ফল ধরে থাকে জন্মাজন্ম, বাকি সব কানন গন্ধশূন্য হয় একদিন।



টুসু

তোমাকে কষ্ট পেতে দেখলে টুসু, বুকের মাটি খুঁড়ে যায় অর্ধপ্রস্ফুটিত কুঁড়ি সব নীরবেই ঝরে যায়, আমি তবু বড় বড় শ্বাস নিই, যাতে ফুসফুসের ভিতর অবধি খোলা বাতাস আর ঝোলা গুড়ের গন্ধ পাই।


জীবন মৃত্যুর কিনার



জীবন মৃত্যুর কিনার আমি দেখেছি
দূর অবধি জল, কোনও সাঁকো থাকে না
শরীর মন এতটাই বাধ্য যেন পুতুল নাচের আসর
আপন পর কেউ কোত্থাও নেই। অদৃশ্য ঘড়ির দোলন,
শশব্যস্ত কিছু ছায়া চলাফেরা করে শুধু
মাঝে মাঝে বিকার আসে
পুরোনো বিছানা খুঁজে খালি হাতে ফিরে যায়।






রবিশস্য

এ বছর তুমি যতখানি বদলে গেছ 
ততখানিই মাটি কুপিয়ে আমি রবিশষ্য বুনেছি
এখন দেখার তোমার বদলের রঙ খাঁটি
নাকি আমার কুপিয়ে ফেলা মাটি !




ছায়ারোদ


সুদীর্ঘ ছায়া দানের পর যদি খাঁ খাঁ রোদেই দাঁড় করিয়ে রাখবে তবে কেন মায়া ঘোড়া বেঁধে রেখেছিলে মানসিকের গাছে? অভ্যাস বড় আলসে মেয়ে, তুমি কি জানতে না? নরম ছায়া ছেড়ে মানুষ কিছুতেই চিতায় উঠতে চায় না! একবার প্রতিষ্ঠা পেলে দেবত্ব ছেড়ে পথের ধুলোয় কে লুটোতে চায় বলো?






Comments

Popular posts from this blog

পাখির কাছে স্বীকারোক্তি

বিচ্ছেদের কবিতা

ভাঙন

বিষণ্ণতার গল্প

কবিতা

আধুনিক কবিতাগুচ্ছ

লক্ষ্মী ঝাঁপির ধান

গুচ্ছ কবিতা

প্রেমের কবিতা