Posts

Showing posts from June, 2019

প্রেমের কবিতা - ১

Image
অথৈ আষাঢ় বুকে পাথর চাপা দিয়ে রাখতে রাখতে একদিন  বুকটাও  পাথর হয়ে হয়ে যায় পাথরের খাঁজে জল জমে  আর চোখের ভাঁজে বৃষ্টি আজ আমার গোপন অশ্রুখানি প্রকাশ্যে এল  সেই ভাঁজ ভাঙা বৃষ্টির মতো যে অশ্রুগুলো আমার একান্ত খুব ভিতরে জমা রাখি কেউ জানে না হদিশ আজ মেঘ থেকে সেই ফোঁটাটা  ঝরবে ঝরবে এমন সময় জানলার কাছে উড়ে এল একঝাঁক  চড়ুই পাখি,  যেন তোমার চোখ অমনি ঢেউ ভেঙে টুপ্ করে চোখের দুয়ার থেকে কাজল পেরিয়ে  গালের বারান্দাময়  অথৈ আষাঢ় 

সূর্য ওঠার আগে

Image
এখন অন্ধকার। পাখি ডাকেনি, বাতাসে মেশেনি রোদের গন্ধ। ছোট্ট ছোট্ট বিড়াল ছানাগুলো মায়ের কোলের ভিতরে কুঁকড়ে শুয়ে আছে। আমার বাড়ির টেপা কলটা একপায়ে দাড়িয়ে চুপচাপ বিশ্রাম নিচ্ছে, ওর মুখ দিয়ে শিশিরের মত ফোঁটা ফোঁটা জল আর ঝরে পড়ছে না। ভোর হলে প্রথম ও শব্দ তোলে ক্যাচ্ ক্যাচ্ মানে দৌড় শুরু। আজ ভোরের আলো ফোটার অনেক আগে থেকে তোমার জন্য অপেক্ষা করে আছি। প্রথম সকালে তোমাকে ফোন করবো। সেই কন্ঠস্বর, আড়মোড়া, নিঃশ্বাসের শব্দ যা এখন আর কোথাও পাই না, তার অন্বষণেই কাকপক্ষী ওঠার আগে উঠেছি। প্রথম সকালে তোমার গলার আওয়াজে একটা মগ্নতা মিশে থাকে, ওই মগ্নতা নিয়ে যখন আমাকে ডাক নামে ডাকো, ভিতরটা সুখে আন্দলিত হয়ে ওঠে। আমার সুখের ঘর অনেক আগেই সেই পাখিটা ভেঙে দিয়েছে, আমি ইচ্ছে করে যার বাসা ভেঙেছিলাম খেলার ছলে। এই ছোটো ছোটো ইচ্ছেগুলো আজ কাল বুকের ভিতর কফিন খুঁজে নিয়েছে। দিনের আলো তো ফোটে কিন্তু আমার হতাশা ঘোচে না। হতাশা দূর করতে গিয়ে নিজের সাথে যুদ্ধে নামি। যুদ্ধ শেষে দেখি ডুবে গেছি আরো গভীর হতাশায়। 

বৃষ্টি কুঁড়িগুলো ফুটবে

Image
বৃষ্টি কুঁড়িগুলো এবার ফুটবে ফুটবে দিগন্তে সূর্যটা সজল হয়েছে আমি চললাম দূ্র, ঝাপসা পথে আষাঢ়কে পথ চিনিয়ে আনবো বলে তুমি মাছ ধরতে যাওয়ার আগে বর্ষাতি নিও গতবার বৃষ্টিতে ভিজে সে কি বাড়াবাড়ি ! একটানা তিন দিন জ্বর জ্বরের ঘোরে ভুল বকছিলে,                      বার বার শুধু একটা নাম, মালবিকা আমি সুজানদের ঝিঙে মাচার পিছনে লুকিয়ে শুধু কেঁদেছি জানি না এই মালবিকা কে? জ্বর সেরে যাওয়ার পর তুমি আর কখনো এই নামটা মুখে আনোনি কিন্তু আমার ভয় করে পাছে আবার তোমার জ্বর আসে ! সেই থেকে তোমাকে তোলা কাপড়ের মতো আগলে রাখি জানি একমাত্র জ্বর ছাড়া কেউ তোমাকে                        আমার থেকে দূরে নিয়ে যেতে পারবে না 

কান্না পেতে শুই

Image
আমার বোতল ছাপানো আবেগ হতে পারে তুমি ব্যস্ত আমার ভাতের হাড়ি উথলে পড়া প্রেম হতে পারে তুমি ব্যস্ত আমার আকাশ ভেঙে কান্না আসে হতে পারে তুমি ব্যস্ত ব্যস্ততা মিটলে কখনও তো তুমি প্রেমিক ! তখন কেন হাত ধরো না? তখনও কেন আপেল কাটো, আঁশ বঁটি দিয়ে?

উদ্বাস্ত

Image
আমি হাঁটছি ক্রমাগত পৃথিবী ছাড়িয়ে এক গ্রহ থেকে অন্য গ্রহে চতুর্দিকে মানুষের ভিড়, প্রকৃতি নিবিড় কেউ চিনছে না আমায়। কেউ ঘর বাঁধার জমি দিচ্ছে না একফালি আমি মরতেও পারছি না কারণ আমার ভোটার কার্ড নেই             আমার আধার কার্ড নেই

নিবেদন

Image
ঈশ্বর, আমার আঠাশ বছরের সমস্ত পাপ নিয়ে নতজানু হয়ে বসেছি তোমার পদতলে আমি তোমার ভক্ত নই। যোগ আমি বুঝি না, মোক্ষ আমার চাই না আমি ভীষণ ভাবে ভাতের গন্ধমাখা মানুষ হিসাবেই সুখী ! ভাবছো তবে কীসের দাবিতে আমি তোমার শরণাপন্ন হলাম? ঈশ্বর তুমি শুধু একটি বর আমায় দিও যখন সে আমার কাছে আসবে যেন আমাকেই খোঁজে যখন সে আমাকে আদর করবে, তখন যেন কারো স্বামী নয়, কারো পিতা নয় শুধুমাত্র আমার পুরুষ হতে পারে। ঈশ্বর আমি উত্তরণ চাই না ! আমাকে তুমি চিরকাল দেহজ আগুনে ভীষণ ভাবে পুড়িও ঈশ্বর নির্বাক ! ঈশ্বর সাতজন্ম ধরে আমার তৃষ্ণার বুকে জল নয়, রক্ত নয়, কেবল একটা বিদ্রুপের হাসি রেখে যায়

কান্নায় ভাঙি কাপ প্লেট

Image
আমার ভিতরে একটা জল ভর্তি বোতল থাকে তুমি তৃষ্ণার্ত জেনে খুলে দিয়েছি বোতলের মুখ গড়িয়ে পড়েছে সব জল তোমার খালি বোতলে এখন নিঃস্ব আমি। আমাকে পানীয় জল চেও না শূণ্যতা ঢাকতে ঘাস বসিয়েছি কলিজায় ঘাসে ফুল হয়েছে ছোটো ছোটো, ওদের মুখ তারাদের মতো প্রজ্জ্বল তবুও শূণ্যতা ঢাকা পড়েনি শুধু রঙ বদলেছে বিশ্বাসের, বিশ্বাসের রঙ কালো হলে তার আদল হয় অপরিচিতের ন্যায় অপরিচিতকে সহজে ভরোসা করা যায় না সর্বদা মনে হয় কি জানি ভিতরে কী আছে ! প্রকাণ্ড মৃত্যু -গহ্বর কিংবা জালি-মেঘ আমি কান্নায় ভাঙি কাপ প্লেট, দ্বিধায় ভাঙি বাঁধ ভরোসা, বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ুক, বন্যায় ডুবুক ছাদ

তিস্তা

Image
তিস্তা, তোকে বলার ছিল তুই মোটেই আমার প্রিয় বন্ধু ছিলিস না। তোকে কখনও আমি ভালো টালো বাসিনি। আজো তোর নাম শুনলে হিংসেটাই বাড়ে ভিতর ভিতর। নামে তোর অথৈ জল, বুকে ছিল তৃষ্ণা গোটা কলেজে তোর স্যারকেই পছন্দ হলো? যখন জানতিস খোদ বিধাতা আমাদের মধ্যে একটাই বীজ পুতে দিয়েছে তখন তুই প্রাণপণ করলি সবুজ ধ্বংসের। লম্বাচুল আর ছিপছিপে চেহারায় তোকে খারাপ দেখাত না তবুও আমার তোকে বেখাপ্পা লাগত। গোটা ক্যাম্পাসে আমাদের যে ফেমাস বন্ধুত্বের সুনাম ছিল আসলে ওটা পুরোটাই ফেক। আমরা দুজনেই কেউ কাউকে নয়, স্যারকে পছন্দ করতাম। তুই মাঝে মাঝে টিফিনে করে যে লুচি আলুর দম পাঠাতিস আমি ওগুলো কখনোই স্যারকে দিইনি, অন্যদের খাইয়ে দিতাম। আমি তখন জেনে গেছলাম পেট আর মনের মাঝে একটা শর্টকাট রাস্তা আছে। অনেকগুলো বছর পার হয়ে গেছে। একটি নদীর তিনটি শাখা হয়ে আমরা বয়ে গেছি। আজ প্রত্যেকের একটা করে বিচ্ছন্ন পৃথিবী। আমার স্মৃতিপট থেকেও হারিয়ে গেছে বহু মুখ তবুও মাঝে মাঝে স্বপ্নে দেখি তুই  আর স্যার হাত ধরাধরি করে বৃষ্টিতে ভিজছিস। আচমকা ঘুমটা ভেঙে যায়,শরীর জুড়ে ঘাম।

বাংলা কবিতা - ১

Image
নারকেলে যেভাবে জল আসে সেভাবেই একদিন আমার বুকে দুধ এসেছিল ধানসিঁড়ি যখন ছোট্ট ছিল ওর দুধ খাওয়ার সময় হলে স্তনের ভিতরের শিরা উপশিরাগুলো শির শির জেগে উঠতো তারপর একসময় ব্যথার বক্সা দুয়ার ভেঙে শরীরটা আলগা হয়ে যেত উষ্ণ দুগ্ধ প্রস্রবন ভিজিয়ে দিত আমার ভেলভেটের গোলাপী রঙের অন্তর্বাস ওর মৃত্যুর পর ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে প্রতিঘন্টায় আমি সহেছি একটানা বর্ষার মত দুধ ঝরার শব্দ একদিন বর্ষাপ্রপাত শেষ হল রোদ উঠলো, তুমি এলে আজ তোমার অপেক্ষায় যখন বসে থাকি তোমার কাজ ফুরোনোর উৎসাহে , আমার ছাদে শিমূলগাছটা তুলো উড়ায় তখন প্রথম মাতৃমাসের মত একই ভাবে আমার স্তনের পাকদন্ডী বেয়ে শির শির করে বেসামাল প্রেম ধুলোবালির মত ঝরে পড়ে

এবং অনন্য

Image
অনন্য, তুমি হঠাৎ এলে  অসময়ের বৃষ্টির মত ছাদে গম শুকাতে দিয়েছিল যে বৌ'টা সে খুব গাল দিল আর আমি ভিজে চুল শুকাতে গিয়ে ফের ভিজে গেলাম 

মাকড়সা আধুনিক সম্পর্কের কারিগর

Image
ভালোবাসা জটিল নয়, সরলরেখার মত সোজা একমুখী। অজস্র বিন্দু থাকে একটি সরলরেখায়। প্রতিটা বিন্দু থেকে একটা করে বৃত্ত আঁকা যেতে পারে, আর প্রতিটা বৃত্ত থেকে একটা করে আস্ত পৃথিবী। সেই পৃথিবীকে আপনার পড়ার টেবিলে দাঁড় করিয়ে অনায়াসে ঘোরাতে পারেন সূর্যের চারিদিকে, ইচ্ছে হলেই ফ্রিজ থেকে একটা বড় সাইজের লাল রঙের আপেল বের করে আপনি সূর্য বানাতে পারেন। কিন্তু জটিল হল সম্পর্ক। সম্পর্ক মাকড়শার জালের মত জটিল এবং সূক্ষ্ম, যা একমাত্র মাকড়শা নিজেই বুনতে পারে। এমন কোনো দক্ষ, বড় কারিগর নেই যে একটা জাল বুনে দেয় হুবহু মাকড়শার মত। আমি যখন ভালোবাসায় ছিলাম তখন আমার একলার ছিলাম। কল্পনায় সুখ পেতাম, স্বপ্নে দেখে ব্যথা পেতাম । একদম ব্যক্তিগত অনুভব । দাতা এবং গ্রহীতা দুটো রোল একলাই প্লে করতাম সুতরাং দুটোই আদর্শ চরিত্র, অস্কার পাওয়ার মত। যখন সম্পর্কে এলাম তখন অন্যজনের ভাবনা ফসল হিসাবে পেলাম। ভালো ফলনে গোলা ভরালাম। অনাবৃষ্টিতে অভাব সহ্য করলাম। অতিবৃষ্টিতে ভিজলাম। একটা অদৃশ্য শৃঙ্খল তৈরী হল দুজনের মাঝে। এখন আমি ভাবছি, সে আমার পাশে বসে মুখোমুখি চেয়ে। সত্যি বলছি রিল কেটে যায় যেন দূর থেকে ডিরক্টার বলে, কাট ! কাট ! শুধু

সংসার ভাঙার আঙুল

Image
অসংখ্য ডালপালা যুক্ত আটত্রিশ বছরের একটা প্রকান্ড পাকুড় গাছ ,  আমি তার ডালে বাদুড়ের মত উল্টো দিকে ঝুলে থাকতে থাকতে ক্রমশ অসহায় হয়ে পড়ছি কিছুতেই বুঝতে পারছি না আত্মসম্মান টিকিয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচবো , নাকি মাথা মুড়িয়ে দু-পায়ে শক্ত করে আঁকড়ে ধরবো মাটি দুহাতে পাপ বাড়ছে আমার হাতের আঙুলে লেগে রয়েছে সংসার ভাঙার রক্ত

বাতাস পুরুষ

অদৃশ্য শৃঙ্খল

Image
আমার হাতে-পায়ে অদৃশ্য শিঁকল শিকল ছিঁড়তে অস্ত্র চাই আমার অস্ত্র নেই তাই একটা চাকরি দরকার জানি চাকরি পেলে এমনিই ভেঙে পড়বে শিকল তখন উড়ে যাবো ততদূর , যতদূর না ডানা হাঁফিয়ে ওঠে তবে কখনো পথ ভুল করবো না কারণ আমার ভুল পথের নাম তুমি

প্রিয় চিঠি

Image
তোমার জানালায় অযত্নে রেখে দেওয়া প্রিয় চিঠির নাম দিয়েছো কবিতা তোমার জন‍্য ফেলে রাখা অগোছালো পথের নাম দিয়েছো নাটোরের বনলতা

বর্ষার কবিতা- ১

Image
তোমার চোখে সমুদ্র বুকে গৃহের প্রতি টান আমার বেহালাতে বৃষ্টি তাই ভিজে গেল গান টুং টাং সরগমে মুছে গেল আদরের ঘ্রাণ 

বাতাস-পুরুষ - ১

Image
বাতাস পুরুষ , তোমাকে উইল করে দিতে পারি আমার বত্রিশ ইঞ্চি বুক তুমি ঘর ছাড়ো , মায়া ছাড়ো শাঁখা পলার তোমাকে লিখে দেবো আমার পানপাতার জমি সারাবছর তুমি খয়ের দিয়ে খেয়ো , ঠোঁট রেখো আগুনের মত লাল বিনিময়ে তুমি ভুলে যেও সন্তানের মুখ

অশ্রু উঠোন

Image
হৃদয় , শুকনো উঠোন খটখটে নিকানো আলপনায় এত শুকনো , দেখলেই যে কেউ ভিজিয়ে দেয় বর্ষা অথবা কান্নায় আমি ভিজে কাপড় , ভিজে চুল শুকাতে দিই তোমার তারে শুকিয়ে গেলে অপেক্ষা বুকে আবার দাড়ায় দুখের পারাবারে

গাছজন্ম

শুভেচ্ছা

Image
বৃষ্টিরা , ঝরতে ঝরতে পাখির কাছে বলে গেল তুমি ভীষণ সৎ পাখি উড়তে উড়তে ফুলের কাছে বলে গেল তুমি খুব বিচক্ষণ ফুল দুলতে দুলতে জলের কাছে বলে গেল তুমি একদম তরল এত প্রসংশা , এত সুখ্যাতি এতো যে নাম ডাক , আমার শুভেচ্ছা শুধু রঙ মিলিয়ে তোমার ঘরে শত্রু নিপাত যাক !