Posts

Showing posts from August, 2019

জলরঙের কবিতা -১

Image
নৌকো   আমি কিছুতেই নৌকো আঁকতে পারি না জাহাজ নয় স্টিমার নয় ভেসে থাকা একটা ডিঙি নৌকো শিশুকাল থেকে বহু চেষ্টা করেছি ছুলে ছুলে পেনসিল ক্ষয়ে গেছে মুছে মুছে রাবার কিছুতেই আঁকতে পারিনি ভাসা নৌকো নৌকো আঁকার পর যখন জল আঁকি অমনি নৌকোর খোল ডুবে যায় জলে শব্দঢিল লিখতে বসলে আমার চোখের সামনে শুধু শ্লেটে লেখা অ আ ক খ অর্থাৎ কী প্যাড ভেসে ওঠে ছোট্টছিলাম, আমি তখন মায়ের লেখায় চক বোলাতে ভালোবাসতাম আঙুল বাঁকানোর পরিশ্রমটা ভালো লাগতো মাথা ঘামানোর ঝঞ্ঝাট ছিল না বলে ইদানিং কি-প্যাড থেকে একটা একটা করে ঢিল কুড়োই, ছুঁড়ে দিই এলোজলে লাফাতে লাফাতে ঢিলগুলো        ব্যাঙ         সাপ কাছিম হয়ে যায় আমি মজা পাই খুশিতে আমার বামহাত ছুঁয়ে দেয় ডানকে শব্দ ওঠে, তালি বাজে, আরও কত কি ! হেসে উঠি আমি জলোল্লাসে ছুঁড়তে ছুঁড়তে ঢিল, সেজে ওঠে জল আমার প্রতিটা নিক্ষেপ যেন অভ্রান্ত তীর সুখ এড়িয়ে প্রতিবার খুঁজে নেয় অসুখ গভীর সহজ ঘুম রাত গভীর হতেই বৃষ্টিরা শুয়ে পড়লো ওদের ঘাসের বিছানা, ঘুম এলো সহজে বৃষ্টিরা কথা রেখেছে ছুঁয়েও দেখেনি নদীর বুক টেনে দেয়নি নদীর গায়ে ছাপা ফুলের

প্রেমের কবিতা - ৩

Image
ডাক ডেকেছি বার বার তার মানে এই নয় যে প্রয়োজন ছিল খুব , 'ডাকতে আমার ভালো লাগে' কিন্তু, বোবা পৃথিবীর সম্রাট তুমি কোনো ডাককেই তোয়াক্কা করা তোমার অন্তত সাজে না মাথার ওপর ওই মুকুট সেও তো পেয়েছো,  শত সহস্র ডাককে উপেক্ষা করেই উঁচু মিনার থেকে যে বিজয় পতাকা উড়িয়েছো, সূর্য ডুবলে রক্তের মতো দেখায় সেও তো পাষাণ হতে পেরেছো বলেই সাড়া দেওয়া তোমার ধর্ম নয়, তোমার ধর্ম কেবল অন্ধ প্রতিপালন আর প্রভুত্ব অনুভূতির ওপর জুলুম করা বুঝি তোমার উল্লাস? আমি মানি না এমন সম্রাট, ঝুটা মুকুট কলজের জোর থাকলে বন্দি করো আমায় নয়তো ডেকে যাবো বারে বারে,                                            রব -- রব -- রব দেখি, কত দিন তুমি পাথ‍র হয়ে থাকো ! কক্ষনো এসো না রব, তুমি আসবে ভাবতেই ভাসমান লজ্জারা বার বার মেঘে ঢেকে দেয় আমার চন্দ্রবিন্দুর চাঁদ ভয়েরা বুকের গোপন কুঠুরিতে অনুশীলন করে অস্ত্রবিদ্যা, প্রতি পদক্ষেপে ভুল করে তলোয়ার আঘাতে আঘাতে রক্তাক্ত হয় শরীর আমার দুঠোঁটের মাঝখানে একফালি আকাশ যেখানে ভোরের দিকে শিশির পড়ে। তুমি আসবে জেনে, ওইখানটা অবিরত থর থর কেঁপে ওঠে সঙ্কোচে। নদীখাতে উথলে ওঠে ব্যথারা, আমার প্

আধুনিক গুচ্ছ কবিতা

Image
কবিতা কী? সেটা কবিতাকেই ঠিক করতে দাও তুমি শুধু পড়ে যাও ব্যথায় প্রলেপ পড়লে নাম দিও মলম মনে পুলক জাগলে আনন্দ ভেবো প্রাণে সুর জাগালে গান বলেই ডেকো যদি শব্দের ঝনঝনানি কনকনানিতে মাথা ব্যথা করে হেলমেট পরে নিও যদি আঁধার লাগে ঘন জলের মতো মনে হয় বিমূর্ত, ছুঁতে পারছি না কিছুতেই তবুও তলিয়ে যাচ্ছি তাহলে অশরীরী বলে জেনো পরিপূরক মানুষের যন্ত্রনা তীব্র তাই যত্ন লাগে ঘুম আসে প্রতিরাতে                                দুহাতে শুশ্রূষা আমাদের যত্ন নেয় মাথার বালিসে পুরে দেয় আরাম আরাম পেলে কোল চায় না কেউই হিংস্র ছাল খুলে রেখে জন্তুও শুয়ে পড়ে তাই দিনে আঘাত পেতে ভয় নেই ব্যথাদের বিরাম দিতে রাতে ঘুমের অফিস খোলা প্রকৃতি পাখিটা, টিপেছে ট্রিগার, ছুঁড়েছে গুলি জখমি বহেড়া                       নিহত ফুলগুলি প্রজাপতি,       বেচেছে খামার              ছেড়েছে বাড়ি                       বাতাসে বারুদ ওড়ে                                     বনেতে মহামারি                  ওরা মুনাফালোভী, চোরা পথে কেটেছে গাছ                                  ধরেছে মাছ প্রকৃতি এতোই বোকা        বোঝে

গুচ্ছ কবিতা ( গদ্য কবিতা)

Image
ইগো ইগো একটি অতিকায় মাছ সুযোগ পেয়েই গিলে নিলো                                  সম্পর্কটাকে চেনা ডাক, পোষা রাগ সব বঁড়শি সুদ্ধ গিলে খেল তুমি আর আমি পাড়ে দাড়িয়ে জল খেলিয়ে খেলিয়ে সাহায্য করলাম ও খেয়ে গেল আমাদের অতীতের গাছ বর্তমানের ফুল, ভবিষ্যতের ফল বেপথে গ্রাম-শহর কোনো পুকুরেই                                         স্রোত থাকে না আমি গ্রামের কিন্তু স্রোত তুলেছি অবাধে ঝাঁপিয়ে পড়তাম উঁচু টিলা থেকে জলের ওপর একটা ঢেউ আঘাত পেলেই                                     নিমেষে বহু হয়ে যেত আমার বেহায়াপনায় পুকুর ভেঙেছে পাড়                              বইয়ে দিয়েছে জল            তাই শিখেছি একটাই জীবন তোলপাড় করতে জানলে স্রোত উঠবে         বিভোর হয়ে হাঁটলে দেখবে      সব রাস্তাই ঘুমিয়ে গেছে 'সহজপাঠ' যে ভালোবাসে আর যে ভালো চায় এই দুজন মানুষকে                        গোটা জীবনে                                        চিনে নিতেই হয় নয়তো তুমি জন্মান্ধ সব পাঠ প্রকৃতি নয়                               কিছু পাঠ চোখও দেয়

যুদ্ধনদী এবং অনন্য

Image
যুদ্ধনদী- ১ অস্থি মজ্জার সবটুকু রস নিংড়ে তোর জন্য একটা নদী বানিয়েছি ভালোবাসাগুলো গড়িয়ে দিয়েছি             সবুজ ঘাসের ওপর দিয়ে আমার বাড়ির সামনে ধূ ধূ নকসী কাঁথার মাঠ রক্ত পায়ে হেঁটে চলে দলছুট গঙ্গা ফড়িংয়ের দল অমাবস্যার অন্ধকারে ডুব সাঁতার দিচ্ছে একজোড়া পানকৌড়ি জামরুল বনে কাঁদে নিঃসঙ্গ ঝিঁঝিঁ পোকা তুইহীন আমার ড্রয়িং রুম সেই ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে আমি তোকে খুঁজছি শহরের আলো আঁধারে আবার যুদ্ধ, আবার বিস্ফোরন নির্বাক হিরোসীমা লেকের ধারে দুটো ঠোঁট জলে ছায়ার ছোঁয়াছুঁয়ি  যুদ্ধনদী- ২ সকালের কুয়াশায় তোকে প্রথম দেখলাম আগুন্তুকের মতো হাঁ করে তাকিয়ে ছিলিস চোখে আগুন অথবা ফাগুন                         কিছু একটা অন্যরকম ছিল তাই চোখে মেলাতে পারিনি চোখ তুই শূন্য হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে বলেছিলিস, কিচ্ছু চাই না শুধু আঙুলের ফাঁকগুলো ভরাট করে দে আমি হেসে তোকে এড়িয়ে গেছলাম তবুও তুই হাতটা সরিয়ে নিসনি স্টেশনের ভিখিরিগুলোর মতো একই ভাবে পেতে রেখেছিলিস আমি সলতের মতো পুড়ছিলাম, লজ্জা নামের ক্ষীণ এক আগুন প্রদীপের মতো আলোক

গুচ্ছ কবিতা

Image
            ১      পশ্চিমে সন্ধ্যা ঘনায়      উত্তরে তুষার পড়ে,      শীত কাতুরে জোনাকিরা                          দরজায় দেয় খিল       উল্লাসে শরীর বেচে ঝিঁ ঝিঁ       অনুভূতিগুলোর চাই                      কয়েকটা স্লিপিং পিল                       ২    আমার মরুময় স্থলজ সঙ্গম                  ফুল ফোটে না       ফল ধরে না একেবারে     তোর জানি জলজ বিছানা    তাই তোর বৌ এর শরীরময়              শালুক ফোটে                              ৩ বলতে পারিস, তোর চোখের কোণে বাসা বাঁধে চড়াই নাকি চিল! ইচ্ছে করেই বুঝি চশমার চৌকাঠ জুড়ে পুষে রাখিস ঝিল? বলতে পারিস, তোর খোলা বুকে শব্দ তোলে গঙ্গা নাকি বিদ্যেধরী? ইচ্ছে করেই ওই নদীতে ভাসাস বোধহয় গল্প-তরী! বলতে পারিস, তোর ঠোঁটের কোলাজ রক্ত গোলাপ কেন? ফাঁসি কাঠে ঝুলছে শহীদ ক্ষুদিরাম যেন !

ভাসান

Image
তুমি তো সেই মানুষ যে কিনা মাটির দেবীকে মহা সমারোহে পুজো করে, একেবারে নিখুঁত পুজো পান থেকে চুন খসা যাবে না, কাঁঠালি কলা জোড়া হলে চলবে না, বেলপাতায় ছিদ্র থাকলে চলবে না। গঙ্গাজলে ভাটা, নিচু জাতের বামুন হলেও চলবে না এমনকি ধুনোর গন্ধ, কর্পূরের উবে যাওয়ার ক্ষমতা সবটুকু যাচাই করে তবেই পুজোয় বসো তারপর কি করো? ভগবানের সাথে সন্ধিপত্র  স্বাক্ষরিত হয়ে গেলেই ওটাকে পানা পুকুরে ঝপাং আর আমি? আমি তো একটা মানুষ ! কোনো শিল্পীর আঁকা ভাস্কর্য নই, ঘোষ পাড়ার গেঁয়ো একটা মেয়ে। আমার বেখাপ্পা স্তন, ভোঁতা নাক, মোটা ঠোঁট সবটুকুই আমার মায়ের জঠরে একটু একটু করে সম্পূর্ণতা পেয়েছে। এ তো কুমুরটুলি থেকে আনানো দেবী মূর্তি নয় যে ইচ্ছে মত তুলি চালাবে! তাই আমার জন্যেও যে ঐ পানাপুকুর কিংবা পচা ডোবায় বরাদ্দ সে তো আমি জানি তুমি তো সেই মানুষ যার বোধনের আগ্রহের থেকে বিসর্জনের তৎপরতা বেশি।

আবৃত্তির কবিতা - ৩

Image
আমরা অসহায়। পরিশ্রম করতে পারি খুব নির্ভর করতে পারি আরও বেশি কিন্তু ম্যাজিক করতে পারি না আপন মানুষগুলো ব্যথায় শুয়ে থাকে আমরা পায়চারি করি, দাঁতে নখ কাটি রুমালে লুকিয়ে নিই কান্না, কারণ দুর্বল মানুষের                   দুর্বলতা প্রকাশেই বেশি সংকোচ একমাএ রুমাল জানে তারা এ জীবনে কত কেঁদেছে মনে মনে বলি এখন চিকিৎসা বড় উন্নত সব ঠিক হয়ে যাবে ডাক্তারের দিকে এমনভাবে চেয়ে থাকি যেন তিনি ম্যাজিক জানেন কিংবা পাথরে পাথরে খুঁজি অন্য ম্যাজিশিয়ান মাথা ঠুকে বলি আর কিচ্ছু চাই না শুধু এইটুকু কৃপা করো ম্যাজিশিয়ান হাসে, ভাবে আগের বারও এক কথা বলেছিল। আমরা বড় বিধ্বস্ত একটি ম্যাজিক শেখার স্কুল চাই জীবনের সব শিক্ষা-সংস্কৃতি-ধর্ম কেবল ম্যাজিক রপ্ত করার জন্যই তো যেে ম্যাজিক যা আমাদের টিকিয়ে রাখবে মৃত্যুর আগে অথবা পরে

আধুনিক বাংলা কবিতা

Image
গতি সুইচ অফ। ফ্যানের তিনটে ব্লেড দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের মতো চুপ করে চেয়ে থাকে একে অন্যের স্বাচ্ছল্যের দিকে হিংসে করে মনে মনে, ভিতর ভিতর অসুখী হয়। সুইচ অন। দৌড় শুরু। আমি হাঁ করে দেখি কে কাকে পিছনে ফেলে জিতে নেবে বাজি, দৌড় শেষে ওরা প্রত্যেকেই ফার্স্ট সেকেণ্ড থার্ড হয়।

পুতুল ঘর

Image
নদীটা ছিল গোরুর ডাবা, নৌকোটা কাগজের চাঁদটা ছিল পুরি থেকে কেনা অ্যালুমিনিয়ামের বাতিল ডিশ, তবু জ্যোৎস্না দিত এই ছিল পুতুলঘর ওটা আসলে পরিত্যক্ত গোয়াল গোরু মরেছে কবেই, তখন শুধু ঘুঁটে থাকতো আর থাকতো এক স্বভাব কবি খড়ের রঙ , ঝড়ের শব্দ , মাটির ডাক ব্যাকুল হলেই শুনতে পেত আজ আর আসল চাঁদেও জ্যোৎস্না নেই সত্যি গাঙে নৌকো নেই, মাটির নিজের কন্ঠ নেই জানি না, পুতুলঘর কেন বসত ঘরের চেয়েও ভালো!

অবসর

অনেকে কাজ ক‍রতে ভালোবাসে আমি বাসি না তাই যখন কোনো কাজ থাকে না সেই সময়টা আমার খুব প্রিয়। সকাল সকাল স্নান করে মেন গেটে তালা ঝোলাই কিন্তু জানলাটা খুলে রাখি ! ভিতরে ভিতরে পুলক জেগে ওঠে যেন এখুনি দারুণ কিছু একটা ঘটবে, আর ঘটেও তৎক্ষনাৎ শামুকের মতো জানলা থেকে মুখ বাড়িয়ে দিই রাস্তার দিকে, ভাবটা এমন যেন কালো পিচের রাস্তা বাবার জনমেও দেখিনি, মনে মনে চাই এই মুহূর্তে রাস্তা দিয়ে যেন একটিও মানুষ না যায় শুধু আমার দুটো চোখ দেখবে শুয়ে থাকা রাস্তাটা কীভাবে ধুলো ঝেড়ে উঠে পড়ছে। তারপর বুকের মধ্যে থেকে রক্তাত্ব ব্যাণ্ডেজটা খুলে একটুও সময় নষ্ট না করে নতুন আর একটা বেঁধে নিচ্ছে। আমার চোখ দুটো বিস্ময়ে গোল হয়ে গেল রাস্তটা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো ক্যালেণ্ডার থেকে আমার ছুটির দিনটা একটু দেখে দাও না! তখনি ধড়াম করে জানলা বন্ধ করে দিলাম ওর মুখের ওপর।

বাঘমুণ্ডি

Image
      পাহাড় : বই এর ভাঁজে শীত ঘুম আর বুক ছুঁয়ে তোর ঠোঁট বিরহী পাহাড় পোষে অসুখ আর ধূসর বাঁধে জোট ঝর্ণা : জল ছুঁয়ে তোর পা আর তোর স্পর্শ ছুঁয়ে আমি ওই পাহাড় জানে সব গল্প কথা ঝর্ণাও অন্তর্যামী বন : শিখর জানে মৃত্যু-কথা,আজ আমিও জানি মরণ কাছ ঘেঁষে আত্মজন তবুও কেন ব্যথিয়ে ওঠে বন নুড়ি : ঝরন্ত জলের শব্দে আহত নুড়িও চেনে আমার উচ্ছলতা, তোর স্পর্শ-দৃষ্টিতে বিচ্ছিন্ন আঙুলের জোড়, নাম দিয়েছি বিহ্বলতা ছৌ-নাচ : পাকদণ্ডির পশ্চিম ঢাল প্রেমিক আদর-গাছ পায়ের কাছে শীত কিত্ কিত্ প্রিয় ছৌ নাচ মুখোশ গ্রাম: প্রিয় জনের মুখ নেই, আছে কেবল কাঁপন ধরা সুখ মুখোশ গ্রামে সবাই শিল্পী, ওদের ছত্রিশ ইঞ্চি বুক তৃণভূমি : বিস্তীর্ণ ঘাসফড়িং গড়িয়ে চলে, পায়ে তাদের চাকা প্রেমিকার সুডৌল বুক যেন সবুজ সুতোয় ঢাকা

বাংলা কবিতা - ২

Image
#চেতনা প্রেম এক চেতনা এই চেতনা নিয়ে আমি পাথর ছুঁয়েছি, হয়েছে দেবতা এই চেতনা নিয়ে আমি মেঘ গড়েছি, ঝরে পড়েছে বৃষ্টি এই চেতনা নিয়ে আমি ফুল ফুটিয়েছি,  জেগে উঠেছে সুগন্ধ এই চেতনা নিয়ে আমি বীজ বুনেছি গজিয়ে উঠেছে গাছপালা এই চেতনা নিয়ে আমি নদী পুষেছি, বয়ে গেছে স্রোতধারা এই চেতনা নিয়ে আমি সকাল দেখেছি ঝরে পড়েছে রোদ এই চেতনা নিয়ে আমি বিকেল খুঁজেছি ডেকে উঠেছে পাখি এই চেতনা নিয়ে আমি চাঁদ ছুঁয়েছি ঘুমিয়ে পড়েছে রাত এই চেতনা নিয়ে আমি তোমায় ডেকেছি তুমি হয়ে উঠেছো প্রেমিক এই চেতনা নিয়ে যত বার চোখ মেলেছি সবুজের দিকে মনে হয়েছে সুন্দর এ পৃথিবী সুন্দর এই বেঁচে থাকা

আবৃত্তির কবিতা - ৩

Image
পৃথিবী, আমি একটুও অবাক হচ্ছি না তোমার লোলুপতায় তুমি সর্বগ্রাসী, একে একে কেড়ে নাও সমস্ত সরল মানুষগুলোকে টোপ দিয়ে হ্যালোজেন ফেলে ঢেকে দাও ফুলের ব্যক্তিগত শুচিতা যে মানুষগুলো ভালোবাসতো হাসতে তারা আজ মঞ্চে দাঁড়িয়ে হি হি করছে যে মানুষগুলো ভালোবাসতো একান্তে গুমরে কাঁদতে তারা আজ মিটিংএ মিছিলে খুব ক্লান্ত পৃথিবী, কী পাও তুমি? সৃজনশীল বিষণ্ণ মানুষগুলোকে কাপ-প্লেটের লোভ দেখিয়ে ! যে মানুষগুলো গান গাইতো বেসুরো কবিতা লিখতো ধান ক্ষেতের ছায়ায় তারা আজ ভীষণ ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে হাততালি, সভা, গ্ল্যামার কেড়ে নিচ্ছে আমার প্রিয় বন্ধু, প্রিয় প্রেমিক পৃথিবী, এখনো বলছি, সাবধান ! তফাৎ যাও ! আমার হাতে আঁশ বঁটি, ওদের ছুঁলে এক কোপে ল্যাজা মুড়ো আলাদা করে দেবো।